সৃষ্টির মাঝে ঈশ্বরের আত্মপ্রকাশ (পাঠ ২)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - খ্রীষ্টধর্ম শিক্ষা - ঈশ্বরের সৃষ্টি উত্তম | NCTB BOOK
106

জন্মের পর থেকে আমাদের বৃদ্ধি ঘটে চলছে। এই বৃদ্ধির সাথে সাথে আমরা যা-কিছু দেখছি তার সবকিছুই ঈশ্বরের সৃষ্টি। আগে আমরা ঈশ্বরের সৃষ্টিকর্ম ও জগৎ সৃষ্টি সম্বন্ধে অনেক কিছুই শিখেছি। এই সুন্দর পৃথিবী নিয়ে রচয়িতাগণ ছন্দ, কবিতা, গল্প, নাটক কিংবা প্রবন্ধ লিখেন। চিত্রের মাধ্যমেও অনেকে সৃষ্টির সৌন্দর্যকে প্রকাশ করেন। সৃষ্টির সৌন্দর্য নিয়ে সুন্দর সুন্দর গান রচিত হয় ও সুরে সুরে সৃষ্টির বন্দনা গীত হয়।

সৃষ্টিকে নিয়ে আমাদের এসব উপলব্ধির মধ্য দিয়ে সৃষ্টিকর্তারই গৌরব প্রকাশ পায়, তাঁরই গুণগান করা। সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে আমাদের ধ্যান ও সাধনা ব্যাপক। কারণ "সব কিছু তাঁর দ্বারাই অস্তিত্ব পেয়েছিল, আর যা-কিছু অস্তিত্ব পেল, তার কোনো কিছুই তাঁকে ব্যতীত হয়নি” (যোহন ১:১-৩)। সৃষ্টির মাধ্যমে তিনি নিজেকে জগতের কাছে প্রকাশ করেছেন।

"আদিতে পরমেশ্বর আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকাজ শুরু করলেন" (আদি পুস্তক ১:১)। পবিত্র শাস্ত্রের এই প্রথম লাইনটি ঈশ্বরের সৃষ্টিকাজের সূচনা প্রকাশ করে। এর মধ্য দিয়ে আমরা বুঝতে পারি নিজেকে ছাড়া ঈশ্বর অন্য যা-কিছু বিদ্যমান সমস্ত কিছুই সৃষ্টি করেছেন। তিনিই একমাত্র সৃষ্টিকর্তা। এ জগতে যা-কিছুর অস্তিত্ব আছে সমস্তই তিনি সৃষ্টি করেছেন।

ঈশ্বরপুত্রের আগমনের মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টিকাজের পূর্ণতা তিনি প্রকাশ করেছেন। আসলে তিনিই আদি, তিনিই অন্ত। সবকিছু নির্ভর করে তাঁর ওপর। সবকিছুর মধ্য দিয়ে মূলত তিনি নিজেকেই প্রকাশ করেছেন। যিনি মানুষের কাছে নিজেকে প্রকাশ করেছেন এবং নিজেকে আরও পরিপূর্ণভাবে প্রকাশের জন্য একটি জাতি গঠন করেছেন, তিনিই একমাত্র ঈশ্বর, যিনি "স্বর্গ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন" (ইসাইয়া/যিশাইয় ৪৩:১)।

এই সৃষ্টিকর্মের মধ্য দিয়ে মূলত ঈশ্বর তাঁর প্রেম ও ভালোবাসাকেই মানুষের কাছে প্রকাশ করেছেন। তিনি ভালোবাসার উৎস, তিনিই ভালোবাসা। তিনিই আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে ভালোবাসতে হয়। সৃষ্টিকে ভালোবাসা ও যত্ন নেওয়ার মধ্য দিয়ে আমরা সৃষ্টিকর্তাকে ভালোবাসতে পারি।

কাজ: সৃষ্টির ওপর ছড়া, কবিতা বা অনুচ্ছেদ লিখে বা চিত্র অঙ্কন করে সৃষ্টি সম্পর্কে তোমার অনুভূতি ব্যক্ত করো।
Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।